স্টোরেজ ডিভাইস( Storage device). স্মৃতি(memory). part-01

প্রিয় পাঠক,
https://allbanglaisbd.blogspot.com/ আপনাকে স্বাগতম !
আমি কেশব কুমার রায় । আমরা সকলেই স্মাটফোন ও কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকি । আর স্মাটফোনের ও কম্পিউটারের মেমরি সম্পর্কে এখনো খুব একটা ধারনা নেই প্রায় লোকের । তাই আজকে আমি মেমরি সম্পর্কে আলোচনা করবো ।

🏠মেমরির প্রকারভেদ (Classification of Memory):
কম্পিউটারের মেমরিকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় । যথা:
☑১. প্রাইমারি বা প্রধান মেমরি (Primary/Main memory) ।
☑২. সেকেন্ডারি বা সহায়ক মেমরি (Auxiliary/Secondary Memory) ।
☑৩. ক্যাশ মেমরি (Cache memory) ।

☑১. প্রাইমারি বা প্রধান মেমরি (Primary/Main memory): যে মেমরির সাথে সিপিইউ এর গাণিতিক ও যুক্তিমুলক (ALU) অংশের সরাসরি অ্যাক্সস থাকে তাকে প্রাইমারি বা প্রধান মেমরি বলে । দ্রুতগতি সম্পন্ন ALU এর সাথে প্রত্যক্ষ সংযোগ থাকায় প্রধান মেমরিকে অত্যন্ত দ্রুতগতি সম্পন্ন হতে হয় । প্রক্রিয়াকরণের সময় সহায়ক মেমরি সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রাম সহায়ক মেমরিতে জমা রাখা হয় এবং কাজ শেষে আবার সহায়ক মেমরিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় । প্রধান মেমরি উদ্বায়ী অর্থাৎ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হলে এ মেমরির সংরক্ষিত ডেটা মুছে যায় । প্রসেসরের কাছাকাছি থাকায় ডেটা লিখন ও পঠন দ্রুত হয় অর্থাৎ অ্যাক্সেস কম যা মোটামুটি 4 হতে 100 ন্যানোসেকেন্ড । র্র্যাম, রম ইত্যাদি প্রধান মেমরির উদাহরণ ।

👇প্রধান মেমরির বৈশিষ্ট (Characteristics of Main Memory):  প্রধান মেমরির সাথে গাণিতিক ও যুক্তিমূলক (ALU) অংশের সরাসরি অ্যাক্সেস থাকে । যেমন:
👉কম্পিউটার পরিচালনার জন্য প্রধান মেমরি অত্যাবশ্যক ।
👉প্রধান মেমরিকে অত্যন্ত দ্রুতগতি সম্পন্ন ।
👉প্রধান মেমরিতে চলমান ডেটা থাকে ।
👉প্রক্রিয়াকরনের সমায় প্রোগ্রাম সমূহ প্রধান মেমরিতে অস্থায়ীভাবে জমা থাকে ।
👉প্রধান মেমরি উদ্বায়ী অর্থাৎ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হলে এ মেমরির সংরক্ষিত ডেটা মুছে যায় ।
👉প্রসেসরের কাছাকাছি থাকায় ডেটা লিখন ও পঠন দ্রুত হয় অর্থাৎ অ্যাক্সেস সমায় কম লাগে ।

🌱প্রধান মেমরির প্রকারভেদ (Classification of main memory):
খুব সুক্ষ জঠিল ইলেকট্রনিক্স কৌশল প্রয়োগ করে প্রধান মেমরি তৈরি করা হয় । কম্পিউটারের ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন সমায় বিভিন্ন ধরনের প্রধান মেমরির উদ্ভব হয়েছে । কম অ্যাক্সেস সমায়, অধিক ডেটা সংরক্ষন ক্ষমতা প্রভূতি ক্ষুদ্রাকার প্রধান মেমরির উদ্ভাবনের প্রচেষ্টা চলছে । Cryogencis memory, Optics memory, Surface acoustic memory প্রভূতি নতুন উদ্ভাবিত প্রধান মেমরির উদাহরন । নিম্নে বিভিন্ন ধরনের প্রধান মেমরির নাম দেওয়া হলো এবং তাদের মধ্যে বহুল ব্যবহৃত কয়েকটি মেমরির বর্ণনা করা হলো:
১. চৌম্বক কোর মেমরি ( Magnetic Core memory) .
২. অর্ধপরিবাহী মেমরি ( Semiconductor Memory).
৩. ম্যাগনেটিক বাবল মেমরি ( Magnetic Bubble memory).
৪. চার্জড কাপল মেমরি ( Charged Couple memory).
৫. পাতলা পর্দা মেমরি ( Thin Film memory).

🌏 ১.  চৌম্বক কোর মেমরি ( Magnetic Core memory): চৌম্বক কোর হচ্ছে ইলেকট্রনিক্স কম্পিউটারের প্রধান মেমরি । এর জন্যই অনেকে এখনো অনেকে প্রধান মেমরিকে কোর মেমরি বলে । এক একটি কোর হচ্ছে রিংয়ের মতো একটি বলয় । যার মাঝখানে ফাঁকা থাকে । বলয়ের মাথা আলপিনের মতো যা চৌম্বক পদার্থ দ্বারা তৈরি । কতোগুলো তার আড়াআড়িভাবে বসিয়ে তারের ছেদ বিন্দুতে এক একটি চৌম্বক বসানো থাকে । তার বরাবর X-অক্ষ এবং Y-অক্ষ বিবেচনা করে চৌম্বক কর বসানো হয় । পরবর্তীতে কোরের মধ্যদিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ করে কোর বিট সংরক্ষন করা ও চৌম্বক কোরে ডেটা সংরক্ষন করা যাবে তা নির্ভর করছে কোরে বিদ্যুৎ প্রভাহের উপর । চৌম্বক কোরের মধ্য বিদ্যুৎ প্রবাহ করলে চৌম্বক কোরটি নিজ অক্ষের উপর ঘুরতে থাকে । এ ঘূর্ণন যদি ঘড়ির কাটার দিকে হয় তবে কোরে 1 বিট সংরক্ষন হবে  । আর যদি ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে ঘুরতে থাকে তাহলে 0 বিট সংরক্ষন হবে ।


🌏 ২. অর্ধপরিবাহী মেমরি ( Semiconductor memory): অর্ধপরিবাহী বস্তু দিয়ে এ মেমরি তৈরি । চৌম্বক কোরের তুলনায় অর্ধপরিবাহী মেমরি অনেক ছোট ও সস্তা । অর্ধপরিবাহী চিপসমূহ সাধারনত ক্যাপাসিটর ও ট্রান্সজিস্টরের সমন্বয়ে তৈরি করা হয় । এ মেমরি সেলের ডেটা যে কোন সমায় লিখন ও পঠন করা যায় বলে একে রা্ন্ডম অ্যাক্সেস মেমরি বা রা্ম (RAM) বলা হয় । এ মেমরির মূলে রয়েছে ফ্লি-ফ্লপ নামে দুই অবস্থাবিশিষ্ট ক্ষুদ্র যুক্তি বর্তনী বা মেমরি সেল । অর্ধপরিবাহী মেমরিকে প্রধানত দু'ভাবে ভাগ করা যায় । যথা:

(i). রা্নডম অ্যাক্সেস মেমরি ( Random Access Memory-RAM): RAM এর পূর্ণরুপ হচ্ছে Random Access Memory । রা্ম এক ধরনের প্রধান মেমরি । কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম এবং চলমান প্রোগ্রাম ও প্রয়োজনীয় ডেটা ধারন করে এ রা্মে (RAM) । প্রচলিত নিয়মে রা্মকে (RAM) প্রধান মেমরি হিসেবে অভিহিত করা হলেও রা্ম (RAM) আসলে বিশেষ প্রযুক্তির মেমরি । এ মেমরির অ্যাক্সেস টাইম ন্যানোসেকেন্ড থেকে মাইক্রোসেকেন্ড পর্যন্ত হয়ে থাকে । পার্সোনাল কম্পিউটারের এ মেমরি ধারণ ক্ষমতা সাধারনত 128, 256, 512 মেগাবাইটের হয়ে থাকে ।

👇রা্মের বৈশিষ্ট্য ( Characteristics of RAM):
👉ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মেমরি স্থান বা মেমরি সেল নিয়ে রা্ম (RAM) গঠিত ।
👉রা্ম (RAM) চলমান প্রোগ্রাম,ডেটা, হিসাব-নিকাশ ইত্যাদির ফলাফল সংরক্ষন করে ।
👉প্রসেসরের খুব কাছাকাছি থাকায় এ মেমরিতে ডেটা সংরক্ষন ও পঠনের গতি দ্রুত হয় ।
👉এ মেমরি উদ্বায়ী অর্থাৎ বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হাওয়ার সাথে সাথে এই মেমরির সংরক্ষিত ডেটা মুছে যায় ।

🌱রা্মের প্রকারভেদ ( Classification of RAM): রা্মকে প্রধানত দু'ভাগে ভাগ করা যায় । যথা:
১. ডিরা্ম (DRAM) বা ডাইনামিক রা্ম (Dynamic RAM)
২. এসরা্ম (SRAM) বা স্ট্যাটিক রা্ম (Static RAM)

🌏১. ডিরা্ম (DRAM) বা ডাইনামিক রা্ম (Dynamic RAM): ডাইনামিক মেমরি চিপ মস ট্রানজিস্টর ( MOS Transistor) দ্বারা ক্যাপাসিটর (Capacitor) এর মাধ্যমে তৈরি করা হয় । এ ক্যাপাসিটর বিদ্যুৎ চার্জ আকারে বাইনারি বিট জমা থাকে । কিন্তু,ক্যাপাসিটরে ধারনকৃত চার্জগুলো সমায় বাড়ার সাথে সাথে ডিসচার্জ ( Discharge) হাওয়ার প্রবণতা থাকে । এজন্য নির্দিষ্ট সমায় পর পর মাইক্রোকম্পিউটারে সাধারনত ডাইনামিক রা্ম (RAM) ব্যবহৃত হয় । 
ডাইনামিক রা্মকে (RAM) আবার দু'ভাগে ভাগ করা যায় । যথা:
(ক). এসডিরা্ম বা সিনক্রোনাস ডাইনামিক রা্ম ( Synchronous Dynamic RAM)
(খ). অ্যাসিনক্রোনাস ডিাইনামিক রা্ম ( Asynchronous Dynamic RAM)

🌏 ২. এসরা্ম (SRAM) বা স্ট্যাটিক রা্ম (Static RAM): স্ট্যাটিক রা্ম পুনঃপুন লিখন ব্যতীত তথ্যসমূহ পুনরুজ্জীবিত করে পাঠ করা যায় বলে এ ধরনের রা্মকে স্ট্যাটিক রা্ম বলে । স্ট্যাটিক রা্ম ফ্লিপফ্লপ দ্বারা গঠিত যা বাইনারি বিট 0  ও 1 ধারন করতে পারে । যতক্ষন পর্যন্ত এই মেমরিতে বিদ্যুৎ প্রবাহ থাকে ততক্ষন পর্যন্ত এই মেমরিতে ডেটা সংরক্ষিত থাকে । বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হলে এই মেমরিতে রক্ষিত ডাটা মুছে যায় । ক্যাশ মেমরি হিসাবে সাধারনত এই মেমরি করা হয় ।  সাধারনত এ মেমরির গতি 4-10 ন্যানোসেকেন্ড হয়ে থাকে । কিন্তু সার্কিট জঠিলতার কারনে উৎপাদন ব্যায় বেশি হাওয়ায় এই মেমরির ব্যবহার কম ।
স্ট্যাটিক রা্মকেও প্রধাণত দু'ভাগে ভাগ করা হয় । যথা:
(ক). সিনক্রোনাস স্ট্যাটিক রা্ম (Synchronous Static RAM) ।
(খ). অ্যাসিনক্রোনাস স্ট্যাটিক রা্ম ( Asynchronous static RAM) ।


(ii).  রম (Read Only Memory,ROM): স্থায়ীভাবে ডেটা সংরক্ষনের অন্যতম প্রধান মেমরি হচ্ছে রম বা রিড অনলি মেমরি । এ ধরনের মেমরি স্থায়ী ও অপরিবর্তনীয় । এ মেমরিতে তথ্য,উপাত্ত বা প্রোগ্রাম স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকে যা শুধু পড়া যায় কিন্তু নতুন করে লিখা যায় না । তবে ইদানিং পুনরায় লিখার উপযোগী রম তৈরি করা হচ্ছে । সাধারনত রম তৈরি করার সমায় এতে প্রয়োজনীয় ডেটা সংরক্ষন করা হয় ।

👇রমের বৈশিষ্ট্য ( Characteristics of ROM):
👉সাধারনত রমে নতুন ডেটা লেখা হয় না । তবে প্রয়োজনে রমে ডেটা রাইট করা যায় ।
👉রম উদ্বায়ী নয় অর্থাৎ প্রবাহ বন্ধ হলে এ মেমরিতে সংরক্ষিত ডেটা মুছে যায় না ।
👉সাধারনত অপরিবর্তন যোগ্য ডেটা রমে সংরক্ষন করা হয় ।
👉রমে সংরক্ষিত প্রোগ্রাম সাধারনত পরিবর্তন করা যায় না । তবে বর্তমানে কিছু রম রয়েছে যেগুলো পুনঃপ্রোগ্রাম করা যায় ।

🌱রমের শ্রেণিবিভাগ ( Classification of ROM):
প্রচলিত বিভিন্ন রমের মধ্যে প্রধান চার'টি নিম্নে আলোচনা করা হলো ।  যথা:
১. MROM ( Mask Programmable ROM)
২. PROM ( Programmable ROM)
৩. EPROM ( Erasable Programmable ROM)
৪. EEPROM ( Electrically Erasable Programmable ROM)

🌏 ১. MROM ( Mask Programmable ROM): আইসি (IC) আকারে এ ধরনের রম ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করা হয় । তৈরি করার সমায়ই এতে প্রোগ্রাম সন্নিবেশ করে দেওয়া হয় যা পরবর্তীতে পরিবর্তন করা যায় না ।

🌏২. PROM ( Programmable ROM): এ ধরনের রমে ব্যবহারকারী নিজেই প্রোগ্রাম করতে পারেন এবং পরবর্তীতে তা আর পরিবর্তন করা যায় না । মিনি কম্পিউটারে সাময়িক ও অটোমোবাইল প্রযুক্তির জন্য এ ধরনের রম অধিক ব্যবহৃত হয় ।

🌏৩. EPROM ( Erasable Programmable ROM): এ ধরনের রমে ব্রবহারকারী নিজে তথ্য লিখে তা অতিবেগুনি রশ্মির সাহায্যে মুছে ফেলে আবার লিখতে পারেন । সফ্টওয়্যার উন্নয়নের জন্য এ ধরনের রম অধিক উপযোগী । এ ধরনের রম তৈরিতে FET-Field Effect Transistor নামক ট্রানজিস্টর এবং বিশেষ ধরনের সার্কিট ব্যবহার করা হয় ।

🌏৪. EEPROM ( Electrically Erasable Programmable ROM): এ ধরনের রমে তথ্য মুছে ফেলার জন্য এবং নতুন করে লেখার জন্য বৈদ্যুতিক স্পন্দন ব্যবহার করা হয় । ফলে সার্কিট বের করে সহজে এবং স্বল্প সমায়ে ত্থ্য মুছা যায় । ব্যবহারিক ডেটা সংশোধনের জন্য EEPROM রম অধিক ব্যবহৃত হয় ।


🔝🔝প্রিয় পাঠক, পরের পার্ট-০২( part-02)-তে স্মৃতি( Memory) -এর বাকি অংশটি নিয়ে আলোচনা করবো ।
পরের পার্ট গুলো সহজে এবং আগে পেতে আমার https://allbanglaisbd.blogspot.com/  এই ব্লোকটি সাবস্ক্রাইব-subscribe করুন । এবং কমেন্ট কক্সে আপনার মূল্যবান মতামত প্রেরণ করুন ।
সকলকে ধন্যবাদ ! Please Stay at home 🏠 and be careful.

৪টি মন্তব্য:

This moment is pain

১. সমস্যা ছাড়া সৃজনশীল সমাজ আশা করা বৃথা ☑☑শিশুর জন্মের শুরুতে তাকে ঘিরে বাবা-মাসহ সবাই শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে এবং শেষে বিশ্বজুড়ে প...