This moment is pain
১. সমস্যা ছাড়া সৃজনশীল সমাজ আশা করা বৃথা
☑☑শিশুর জন্মের শুরুতে তাকে ঘিরে বাবা-মাসহ সবাই শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে এবং শেষে বিশ্বজুড়ে পাঠশালা তৈরি করে। এই পাঠশালা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সেই শিশুটি আস্তে আস্তে একজন সৃজনশীল মানুষ হয় অথবা মস্ত বড় একজন চোর বা দুর্নীতিবাজ হয়। তার শিক্ষাজীবনে কেউ কখনও তাকে বলেনি, শেখায়নি, হাতে নাতে প্রশিক্ষণ দেয়নি যে তুমি চুরি করবে, মিথ্যা কথা বলবে, অন্যায় করবে, বড় হয়ে ঘুষ নিবে, দুর্নীতি করবে ইত্যাদি।
তাকে শিক্ষা দেয়া হয়েছে অন্যায় করা, চুরি করা, ঘুষ নেয়া, দুর্নীতি করা এবং মিথ্যা কথা বলা যাবে না। অথচ দেখা যাচ্ছে তাকে যা শেখানো হয়েছে সে ঠিক তার উল্টোটা করে চলেছে। যে শিক্ষার কোনো শিক্ষক নেই, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই এবং যে শিক্ষা গ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে, সে সেটাই শিখেছে।
কীভাবে এটা সম্ভব হলো? যেখান থেকে তাকে দূরে থাকতে বলা হচ্ছে ঠিক সেখানে যেতে সে উঠে পড়ে লেগেছে। সে চুরি করছে, পুলিশ ধরছে। সে নতুন পদ্ধতিতে চুরি করছে, পুলিশ নতুন করে প্রশিক্ষণ নিয়ে তাকে আবার ধরছে। বলা যেতে পারে চোর সমস্যা সৃষ্টি করছে, পুলিশ সমাধান খুঁজছে।
আমাদেরকে শিখানো হচ্ছে, সাদা মানুষ কালো মানুষকে ঘৃণা করতে পারবে না, অথচ আমরা সেটাই করছি। ছেলে ও মেয়ের সমান অধিকার স্বত্বেও বণ্টনে সেটা মানছি না। যা শিখছি তা না করে যা শিখছি না তাই করছি। কী কারণ রয়েছে এর পেছনে? প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণে রয়েছে এক পরিকল্পিত শিক্ষা।
এ শিক্ষার রহস্য জানতে, বুঝতে, খুঁজতে বিশ্বজুড়ে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অথচ সে শিক্ষায় কেউ শিক্ষিত না হয়ে শিক্ষিত হয় নিজ নিজ পরিকল্পিত এক মজার শিক্ষায় এবং সেই শিক্ষায় যারা শিক্ষিত তাদেরকে আমরা বলি কুখ্যাত। কারণ তারা সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে সমাজের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। আমার মতে তারাই পরিবার, সমাজ, দেশ এবং বিশ্বের সর্বনাশের কারণ।
আমরা বলি “failure is the pillar of success.” সেক্ষেত্রে এও বলতে পারি সমস্যা বা চাপ থেকেই সমাধানের উৎপত্তি হয়। তাহলে কি সমস্যা বা চাপ আমাদের জীবন চলার, জীবনের গতি বাড়াবার, জ্ঞানের প্রসার বৃদ্ধি করার এবং চাপ নিয়ন্ত্রণ করার গাইড লাইন?
সমস্যা এবং চাপ আছে বলেই আমরা শিখছি, জানছি, শিক্ষা গ্রহণ করছি বা চাপের কারণে আমরা বাধ্য হচ্ছি সমাধান খুঁজতে। তাহলে কেন এত অবজ্ঞা এবং কেনই বা চাপ এবং সমস্যাকে বাদ দিয়ে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে বেছে নিয়েছি এবং কেনই বা এখনও কিছু করছি না? সমস্যার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার উদ্ভব। সেক্ষেত্রে সমস্যাকে ইগনোর করা ঠিক হবে না।
আমরা চেষ্টা করি কোনোভাবেই যেন সমস্যা বা চাপ আমাদের আশপাশে না আসে। আমাদের শিক্ষা প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য হলো সমস্যা এবং চাপ থেকে যেন আমরা দূরে থাকি। যার কারণে হঠাৎ যখন বড় ধরণের সমস্যা বা চাপ এসে হাজির হয় তখন আমাদের মধ্যে প্যানিক সৃষ্টি হয়, আমরা প্যারালাইজড হয়ে যাই, ভারসাম্য হারিয়ে ফেলি বা লকডাউনে চলে যাই। শেষে বেঁচে থাকার তীব্র আকাঙ্ক্ষা আমাদের বাধ্য করে সমাধানকে খুঁজতে।
তার মানে সমাজের সমস্যা এবং চাপ সামলাতে আমরা শিক্ষা নেই এবং দেই। হ্যাঁ, এটাই আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। সময় এসেছে বাস্তব সম্মত শিক্ষার জন্য নতুন করে ভাবা।
আমি মনে করি যারা মানুষ জাতির জন্য সমস্যা সৃষ্টি করছে তারাই প্রকৃতপক্ষে মানুষ জাতির “pillar of success.” এখন সমস্যাকে কীভাবে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মধ্যে আনতে পারি এটাই হওয়া উচিৎ নতুন প্রজন্মের জন্য প্রণীত নতুন শিক্ষাপদ্ধতির একটি ভিত্তি। যে জিনিসগুলো আমরা সবাই বর্জন করতে চেষ্টা করছি, যেমন চুরি করা যাবে না। অথচ সেগুলোই আমরা অর্জন করছি। যেমন চুরি করা যাবে না। অথচ সেগুলোই আমরা অর্জন করছি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কি প্রস্তুত এসব বিষয় ভাবতে? আমরা বলি চাপ দিয়ে কিছু করা যাবে না বা ফল ভালো হবে না, কথাগুলো সত্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে। যেমন একটি ডিমকে বাইরে থেকে চাপ দিলে সেটা ভেঙ্গে যাবে। কিন্তু ভেতর থেকে চাপ দিলে ডিম থেকে একটি জীবন বের হয়ে আসবে। দুই ক্ষেত্রেই কিন্তু চাপের একটি বিশাল প্রভাব জড়িত। শিক্ষা প্রশিক্ষণের কাজ এখন সঠিক এবং গঠনমূলকভাবে গাইড দেয়া কখন, কী অবস্থায় এবং কীভাবে চাপকে প্রয়োগ করতে হবে। হচ্ছে কি তেমন করে প্রশিক্ষণ বর্তমানে?
আমি মনে করি আমাদের সুশিক্ষা এবং কুশিক্ষা দুটোর ওপরই আলোচনা করতে হবে। গোপনকে উন্মুক্ত করতে হবে। কোনো প্রকার হাইডিং এজেন্ডা শিক্ষা প্রশিক্ষণে থাকলে চলবে না। আলোচনায় ডিবেট তৈরি করতে হবে।
যেমন শুধু বললেই হবে না দুর্নীতি করা যাবে না বা মিথ্যা বলা যাবে না। বরং আলোচনা করতে হবে কেন এগুলো করা যাবে না। কেস স্টাডি করতে হবে, ফলাফল বের করতে হবে নিজ নিজ জায়গা থেকে। তাহলে ব্যক্তি তার ভালোমন্দের দায়ভার নিজে নিতে বাধ্য হবে।
বর্তমানে কোভিড-১৯ চাপ সৃষ্টি করে আমাদের জীবন নাশ করছে। এখন এর থেকে রেহাই পেতে যদি সবাই বসে থাকি হবে কি সমাধান? সেক্ষেত্রে প্রথম কাজ হচ্ছে কোভিড-১৯ সম্পর্কে জানা যেমন সে কী পছন্দ করে, কী করে না, কেন করে কিংবা কেন করে না ইত্যাদি। যখন আমরা এর গুণাগুণ সম্পর্কে সচেতন হবো ঠিক তখন সহজ উপায়ে এর সমাধান করতে সক্ষম হবো।
তার আগ পর্যন্ত লকডাউন, ভয়, আতঙ্ক আর নিজেদেরকে তিলে তিলে শেষ করা ছাড়া অন্যকিছু করতে সক্ষম হবো না। ঠিক তেমনি করে সমাজের যত খারাপ শিক্ষা বা খারাপ কাজ রয়েছে, কেন রয়েছে সেগুলো জানতে হবে। জানতে হলে এসব বিষয়ের ওপর আলোচনা পর্যালোচনা করতে হবে। আর তা করতে হবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রশিক্ষণে এবং তা করতে পারলেই শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য সফল হবে। তা না হলে যেমন আছি তেমনই থেকে যাবো।
একটি ঝিনুক যখনই দেখে বিপদ বা আতঙ্কের সম্ভাবনা ঠিক তখনই সে নিজেকে বন্ধ করে ফেলে। ঠিক সমাজে যারা অপরাধ করে তারা কিন্তু ভয় এবং আতঙ্কের কারণে চুপচাপ থাকে। তবে সময় অনুকূলে এলে ঝিনুক যেমন মুখ খুলে তার গতিতে চলে, সমাজের অপরাধীরাও ঠিক তাই করে। সুশিক্ষা পেতে সারাক্ষণ ঘৃণা, চাপ বা ভয় নয় বরং মুক্ত মঞ্চে “norm and values”-এর আলোচনার সুযোগ তৈরি করার পদ্ধতি, দক্ষতা এবং সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। সেটাই হোক শিক্ষাপ্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য।
২.মস্তবড় দুনিয়ায় ক্ষণিকের জীবন
☑☑এত চমৎকার পৃথিবী অথচ তাকে দেখারই সুযোগ এবং সময় হলো না, অথচ যে কোন সময় চলে যেতে হবে! তা তুমি কি সব কিছুর সময় নির্ধারণ করে দিয়েছ নাকি সব কিছু ঝরে পড়ছে যার যার জায়গা থেকে? আমি বিনয়ের সঙ্গে জানতে চাইলাম তার কাছে।
তিনি আমার দিকে শুধু তাকিয়ে রইলেন। আমি যে বিনয়ী হয়ে, কাকুতি মিনতি করে, চিৎকার এবং আর্তনাদ করে তোমাকে ডাকি তুমি সব জানো তারপরও কেন নিস্তব্ধ নীরবে থাকো? কখনও কি তুমি আমাদের ডাকে সাড়া দাও? আকার ইঙ্গিতে এতটুকুই বুঝলাম সত্যিকার প্রয়োজনে তিনি আমাদের পাশে থাকেন।
সেদিন শবেবরাতের রাতে অনেক কথাই বলার ছিল কিন্তু বলা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ভেবেছি অনেকবার শেয়ারও করেছি কিছু লোকের সঙ্গে। তিনি নিরাকার তারপরও ইমাজিন করতে পারি কারণ যেহেতু মানুষ জাতি শ্রেষ্ঠ জীব এবং পরিপূর্ণতায় ভরা।
যেখানে কোন কিছুরই অভাব নেই সেক্ষেত্রে আমাদের মাঝেই তার অস্তিত্ব খুঁজে পাবার মত দক্ষতা শুধু আমাদেরই আছে। কথাটি বলেছিলেন সৌদি আরবের একজন ধর্মপ্রাণ, জ্ঞানী এবং বয়স্ক ব্যক্তি।
কয়েক বছর আগের কথা। মানসিকভাবে বেশ ঝামেলা চলছে তখন। মা অসুস্থ হয়েছেন, আমার শরীরটাও ভালো না। দুর্বল এবং মানুষিক অসুস্থতার মাঝে আমি হঠাৎ কখন ঘুমিয়ে গেছি, তাই নানা চিন্তার মাঝে ঘুমের ঘোরে এমনটি স্বপ্ন দেখেছিলাম সেদিন। আমি আবার জেগে জেগে স্বপ্ন দেখি, বড় বড় কল্পনা করি এবং সেই রাজ্যে বেশ ঘোরাঘুরি করি।
এর মাঝে বেশ উঠেপড়ে লেগেছি আমাদের অর্থাৎ মানুষ জাতির অস্তিত্ব এবং দীর্ঘায়ু লাভের উপায় নিয়ে। আমি মেনে নিলাম বা বুঝলাম অসুখ বা দুর্ঘটনার কারণে অকাল বা আকস্মিক মৃত্যু হতেই পারে কিন্তু তাই বলে কী দেড়শত বা দুইশত বছর বাঁচার সম্ভাবনা তৈরি করা যাবে না?
আমরা যেমন দেখছি অনেকে একশত বছরের বেশি বেঁচে আছেন তাহলে কেন চেষ্টা করছি বা ভাবছি না যে দেড়শত বা দুইশত বছরও বেঁচে থাকা সম্ভব? আমরা জেনে গেছি জন্ম হলেই মৃত্যু অনিবার্য তবে মৃত্যু কবে এটা কিন্তু অজানা রয়েছে।
এখন যদি আমরা আমাদের সম্পর্কে জানি যেমন আমাদের শরীর কীভাবে গঠিত, কী উপাদানগুলো শরীরের জন্য প্রয়োজন এবং কীভাবে তা পেতে পারি ইত্যাদি, তাহলে আমি নিশ্চিত আমরা আমাদের বেঁচে থাকার মেয়াদ বর্তমানের চেয়ে আরও বেশি বাড়াতে পারি। পৃথিবীটা মস্তবড় অথচ আমাদের বেঁচে থাকার সময়টুকু খুবই কম। এই ধারণাটি মাথায় ঢুকে আমাদের সর্বনাশ করছে। যেমন আমরা সবাই ব্যস্ত কীভাবে তাড়াহুড়ো করে সব কিছু করতে হবে। কাজে যেমন নিয়ম রয়েছে আট ঘণ্টার মধ্যে দিনের যে কাজগুলো তা শেষ করতে হবে। এই শেষ করতে হবে বলেই কিন্তু আমরা তাড়াহুড়ো করি এবং যার কারণে প্যানিক সৃষ্টি থেকে শুরু করে প্যারালাইজড পর্যন্ত হয়ে যায়।
এখন প্রশ্ন হতে পারে, যদি চাপ সৃষ্টি না করা হয় তাহলে তো আমরা কিছুই করবো না। অলস হয়ে ঘরে বসে শুয়ে পঙ্গু হয়ে মরবো। এটাও ঠিক। এক্ষেত্রে আমাদের দুনিয়ায় বেঁচে থাকার ভিসা বাড়াবার দরকার নাই? আমি মনে করি আমরা যেহেতু স্রষ্টার সেরা জীব সেক্ষেত্রে আমরা দুইশত বছর বাঁচতে চাই।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
This moment is pain
১. সমস্যা ছাড়া সৃজনশীল সমাজ আশা করা বৃথা ☑☑শিশুর জন্মের শুরুতে তাকে ঘিরে বাবা-মাসহ সবাই শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে এবং শেষে বিশ্বজুড়ে প...
nice
উত্তরমুছুনonek sundor
উত্তরমুছুনAro articles chai
উত্তরমুছুনThanks
উত্তরমুছুনT
উত্তরমুছুনThanks
উত্তরমুছুন